বিষাণবাদক অরফিউস : নজরুল
‘অন্নদা-সূত ভিক্ষা চায়! কী কহিব এরে কপাল বই?’ আক্ষেপ করেছিলেন নজরুল। তাঁর অন্তরতম আক্ষেপের এই ছিল অভিব্যক্তির ভাষা ও ইডিয়ম। ‘ইসলাম’ কাজী নজরুলের সারকামস্ট্যান্সেস্; হিন্দুত্ব তাঁর স্বীকৃত পরিচয়। আমি তাঁর উল্লেখ করি কাজী নজরুল ব’লে; ছেলেদের পদবীতে তিনি ‘ কাজী’টুকুই রেখেছিলেন— আর তাঁর নাম যাতে কেউ আরবী ধাঁচে ‘ন্জ়্র্-উল্’ বা মুসলমানি কায়দায় ‘নাজ়িরুল’ উচ্চারণ করে না ফেলে, তাই একটা সময়ে তিনি বাংলা হরফে ইচ্ছা করে নাম লিখতেন ‘নোজ্রুল’— পশ্চিমবাংলার সাবলীল গ্রাম্য উচ্চারণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। আমার এক উৎকলবাসী বন্ধু বিদেশী সংবাদপত্র ও তথ্যচিত্র থেকে দেখিয়েছিল যে পশ্চিমে ‘ইনফ্যাণ্ট সারকামসিশন’কে অপরাধ মনে করবার প্রবণতা বাড়ছে। এ তো একবিংশ শতাব্দীর কথা। আমি তাকে সগর্বে বলেছিলাম, প্রায় ১০০ বছর আগে একজন বাঙালী কবি তাঁর দুই ছেলের খৎনা করাতে রাজী না হয়ে মুসলমান সমাজ থেকে ঘাড়ধাক্কা খেয়েছিলেন। তাঁর বাড়িতে নিমন্ত্রণে মেঝেতে আসন পেতে বসে কাঁসার থালায় মাছের ঝোল-ভাতের হিঁদুয়ানি ব্যবস্থা দেখে একাধিক মুসলমান সাহিত্যিক— যাঁরা পরবর্তীকালে পূর্বপাকিস্তান ও বাংলাদেশের (অপ)সংস্কৃতির ধ্বজাধারী হ...