সুভাষচন্দ্রের প্রতি
ধ্বনিল শঙ্খ তব কিরণের মত
প্রভাতরবির, তেজদৃপ্ত বাহু তার
ক্রুদ্ধ নির্ঝরের মত প্রমত্ত দুর্বার।
হাতের শৃঙ্খল মম চরণের বেড়ি
মুহুর্তে খসিয়া গেল কারাদ্বারে হেরি
মূর্ত রুদ্র কৃত্তিবাস, নিষ্করুণ রূপ—
তব আঁখিপানে চাহি রহিনু নিশ্চুপ॥
পরাজিত মানবতা আহত নিঃশ্বাসে
চাহিল আকাশপানে দুরাশায় ত্রাসে—
মেঘের আলিঙ্গণে প্রতি কোণ ঘেরি
দারুণ ভর্ৎসনা, ভয়াবহ রণভেরী!
ধূসর ধূলায় ঢাকা আচ্ছাদনখানি
দীর্ণ করে দাঁড়ালেন দেব চক্রপাণি।
সহসা বিস্মৃত ধরা পেল ফিরে ভাষা,
হারানো চেতনা তার। টুটিল কুয়াশা;
তৃষিতা ধরার বুকে আর্দ্র তব স্বর—
রহিনু জিজ্ঞাসায় তব আজও নিরুত্তর॥
হৃদয়ের অধিক কিছু নৈবেদ্য, হায়,
মর্চে-ধরা শিকল-বাঁধা হস্ত তোমায়
কী দেবে আর? শুধু শুষ্ক আরাধনা;
কেবল ক্রুশের বোঝা কাঁটাতারে বোনা।
ফিরে গেলে, ঋষি ওগো, অভিমানভরে—
পর্বতে, বজ্রে আর উত্তাল নির্ঝরে।
তোমার হতাশ আঁখি, নিবে-আসা বাণী
হলাহল কজ্জল, মর্মের গ্লানি,
ক্ষমাহীন পাপ। তবু বিক্ষুব্ধ চিতে
ধূসর নিঝরধারে স্তব্ধ নিশীথে
তব আবাহনে ফিরি নিরুপায় হয়ে;
কোষরুদ্ধ তব অসিধার যায় ক্ষয়ে।
দীর্ণহিয়া সমুদ্র আর স্থিতধী ভূধর
আর্দ্র মেঘমালা পরি রহে নিরুত্তর॥
Comments
Post a Comment