ঋষয় ঊচুুঃ ১
১। প্রাক্কথন
২। প্রথম অধ্যায়। “সর্বভূতাশায়স্থিতঃ...”। স্ত্রীপর্ব্ব, উদ্যোগপর্ব্ব, স্কন্দপুুরাণ
সম্প্রতি মহাভারত সম্পর্কে একজন মন্তব্য করেছিলেন ‘ও আমার ঢের জানা আছে’— তাঁকে মুখের ওপর ‘মিথ্যাবাদী’ বলে দিয়েছিলাম, সেই অবধি মুখ-দেখাদেখি বন্ধ। মহাভারত কখনোই যথেষ্ট জানা যায় না।
দূরদর্শনের মহাভারতের সবচেয়ে বড় দুর্লক্ষণটা কোথায় ছিল জানেন? চিত্রনাট্যকারের নাম লেখা, ‘ডঃ রাহী মাসুম রেজা’। না না। আমি এ-কথা বলছি না তিনি বিধর্মী বলে। নজরুল যে কীর্তন লিখেছেন তার আলোড়নের রহস্য এখনও বুঝে উঠি নি, আমি কী প্রকারে এ-কথা বলব? তবে হ্যাঁ, নজরুল-নামক পাত্রটি যেমন ভরে উঠেছিল কৃষ্ণপ্রেমে টাঁয়ে টাঁয়ে— ততখানি ভরে ওঠার material ডঃ রেজা ছিলেন কি না, তা আমার জানার কথা নয়। বেদান্তের সারই ভগবদ্গীতা— এইটুকু আমি জানি। আর বিশ্বাস ব্যতীত যিনি সকল বোধের অতীত— তাঁকে ছোঁয়া যায় না। অর্জুন বিশ্বরূপ দেখেছিল, দুর্যোধনও দেখেছিল। ঐ রূপ ত সেদিন কুরুক্ষেত্রে প্রত্যেকেই দেখেছিল, জীবনের ও সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়ের বল্গা-হাতে শান্ত ধীর ময়ূরপঙ্খ-প্রসাধিত বৃষ্ণিসিংহকে। সবাই দেখেছিল, কিন্তু চিনতে পেরেছিল ঐ একজনই। অর্জুন বিশ্বাস করলে, দুর্যোধন ভাবলে ভেল্কিবাজি। সে যাই হোক্, ও-কথা আমি বলছি না। আমি বলছি নাম লেখার ভঙ্গিটার কথা। যখন বিদ্যা অবিদ্যা সকলের ঊর্ধ্বে, বেদ যাঁর ব্যাখ্যা করতে অপারগ— সেই নারায়ণের জীবনচরিত লিখছি; যখন বেদজ্ঞানহীন মহাভাগ কীর্তিবাস চারণ উগ্রশ্রবাঃ-র যুগাপরাহত অনবদ্য কথনের পুনঃকথন মাত্র করতে চলেছি; তখন কোথায় লাগে যে আমার একটা ডক্টরেট আছে? সমাজ আমাকে শিক্ষিত মনে করে, এইটুকু নামের আগে জুড়ে দেবার কী প্রয়োজন আছে? যাঁর সামনে রাজারা মুকুট ফেলে দিয়েছে, বীরেরা অস্ত্র ফেলে দিয়েছে, নারীরা গুণ্ঠন ফেলে দিয়েছে, সমুদ্র গর্জন ফেলে দিয়েছে, ইন্দ্র বজ্র ফেলে দিয়েছে— তাঁর চিরায়ত আড়ম্বরহীন আরাধনার এ ত পন্থা নয়। ঐ মনোভাব নিয়ে মহাভারত লেখা যায় না।
আমার ক্ষুদ্র পাত্র কানায় কানায় টলমল করে ওঠে। প্রতি পাঠে এক এক নতুন রহস্য উন্মোচিত হয়ে যায় এখনও। জীবনের রহস্য, জগতের কার্যকরণের রহস্য। কর্তব্যের রহস্য। আর মহাভারত সেইসব প্রশ্নের উত্তর মানবসভ্যতাকে জুগিয়ে এসেছে বহুকাল ধরে। এ মহাভারতের মূল লিপির অনুকথন নয়। আমার পাত্রটি ঠিক যেই যেই ভাবে ভরে উঠছে ভিক্ষা-অমৃতে, সেই রূপে সেই ভাবে লেখা। টীকা বা ব্যাখ্যা বলার দুঃসাহস আমার নেই। আমার ‘বোধ’ বলতে পারি বোধহয়।
নিবারণ চক্রবর্তীর প্রয়োজনীয়তা রবীন্দ্রনাথ নিজেই বুঝে তাঁকে আশ্রয় দিয়েছিলেন জোড়াসাঁকোয় আপন লেখার টেবিলের একটি কোণে; গুরুদেবের একনিষ্ঠ ভক্তরাও নইলে কেউ অমিত রায়ের সঙ্গে একমত হতেন না। চ্যাপলিন তাঁর যুগোত্তীর্ণ প্রতিভাবিচ্ছূরণ নিয়েও চলচ্চিত্রের বিবর্তনকে যে আনন্দের সঙ্গে মেনে নিতে পারেননি, সেটা তাঁর সমস্যা ছিল— দি সিকা, বার্গম্যান বা রেনোয়াঁর হাতে সবাক্ চলচ্চিত্রে শিল্পসৃষ্টি তাই বলে থেমে থাকেনি। প্রথমে ancestry-র অছিলায় মূল কাহিনীক্রমের সঙ্গে আপাত অসংলগ্ন একটা খণ্ডকাহিনী শুনিয়ে মহাভারতকার মহত্তম মানবচরিত্রেরও একটা মূল সমস্যার দিকে তর্জনী-নির্দেশ করেছেন, পাঠক যাতে মহাকাব্যের পরিসরে বহুবার সেই ভ্রান্তি দেখতে পেয়ে গোড়াতেই চিনে নিতে পারে। আবার কয়েক পাতা পরেই তার ঠিক উল্টো একটা most shocking episode দ্বারা লেখক যেন আগের সেই (হয়ত বা উপেক্ষিত) কাহিনীটিকে হাইলাইট্ করে দিলেন— ‘না হে, বৃথা শোনাইনি ঐ উপাখ্যান।’ প্রবীণ রাজনীতিবিদ্দের সভা থেকে উৎপন্ন যুগাগ্নিস্ফুলিঙ্গের চরিত্রনির্ধারণ ও কার্যকারণের মূল underlying themeটা সেই ভূমিকায় শুনিয়ে, ব্ল্যাকবোর্ডের ওপর আবার সেটার তলায় একটা সরলরেখা টেনে দিয়ে এবার মহাভারতকার বহুবার বহুজনের মধ্যে সেই একই বিড়ম্বিত কর্তব্যবোধের পরিচয় দিয়ে যাবেন নিরুত্তাপ হয়ে— তিনি আশা করবেন পাঠক এবারে নিজেই করে নেবে বিশ্লেষণ। দ্রোণচার্য ও ধৃতরাষ্ট্র দুজনেরই আদিম অসংস্কৃত পুত্রস্নেহ— সেখানে দেখি পিতার দায়িত্ব ঠিক কতটুকু এবং পিতার সীমাবদ্ধতা ঠিক কতটা, সেই দৃশ্যে তাঁরা দুজনেই অন্ধ। গাঙ্গেয় নাহয় অনবসরের শৃঙ্খল দিয়ে নিজেকে আগেই বেঁধে ফেলেছিলেন, কিন্তু যেই অর্জুন স্বয়ং ‘কবিনামূশনাকবিঃ’র কাছে কর্মযোগের ব্যাখ্যা শুনলেন সেই তিনিও স্ববিচারে গাণ্ডীবধন্বার কর্তব্যের মোহ ত্যাগ করতে পারলেন না; তাঁর হাতের তুলনায় গাণ্ডীবকে অত্যধিক ভারী হয়ে উঠতে হল বিধাতা ও শ্রীকৃষ্ণের যুগ্ম ষড়যন্ত্রে— তিনি নিজের কাছেও স্বীকার করতে ভয় পেলেন হয়ত বা তাঁর হাতের পেশী হয়ে পড়েছিল গাণ্ডীবের জন্য কিঞ্চিৎ দুর্বল। কখন উত্তরাধিকারী নির্বাচন করে লাইমলাইট্ থেকে সরে দাঁড়াতে হয়, রাজার সেইটাই শেষ শিক্ষা। ভগবান্ তথাগতের সেই সদুপদেশ বিম্বিসার অগ্রাহ্য করেছিলেন। যুদ্ধপ্রাঙ্গণের সকল ঝুঁকি সত্ত্বেও শ্রীকৃষ্ণ সেই মহাযুদ্ধে অস্ত্রধারণের গৌরব থেকে আপনাকে স্বেচ্ছানির্বাসিত করেছিলেন— কর্তব্যের এক চুল এদিক ওদিক (যাঁর কর্মের ও ফলের দায় নেই) তিনি যাননি। অথচ তাঁকে দেখে অর্জুন শেখেননি কোথায় থামতে হয় সেটাও চিন্তনীয়, শেখেননি কতটা গৌরবের তোরণদ্বার পার করে কোন্ অপরিচয়ের গর্ভগৃহে ঈশ্বরসন্নিকটে জীবনমন্দিরকে সার্থক করে তুলতে হয়।
উদ্যোগপর্বে আসলে অর্জুন নারায়ণী সেনা পরিত্যাগ করে শ্রীকৃষ্ণকে নয়, শ্রীকৃষ্ণ দুর্যোধনকে পরিত্যাগ করে অর্জুনকে নির্বাচন করেছিলেন। তিনি যাঁর রথের চালক হয়েছিলেন, কেবল জয়লক্ষ্মী বা ধর্মই নয়— ধর্মকে যিনি সংজ্ঞায়িত করেন তিনিও তাদেরই দলে। অর্জুনকে যুদ্ধপর্বে শেষ নায়কত্ব দিতে শ্রীকৃষ্ণ নিজ হাতে প্রায় সংহার করেছেন তার দুর্লক্ষণদের। জরাসন্ধ-বধ একাধারে শ্রীকৃষ্ণের নিজের প্রতিশোধ বা প্রতিকার আবার অর্জুনের এক সম্ভাব্য মারাত্মক শত্রুকে আগে থেকেই নিশ্চিহ্ন করে রাখা। ‘একলব্যকেও আমিই হত্যা করেছিলাম,’ বলেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। কিন্তু একলব্যকে তিনি হত্যা করেন নি; যদি ধরে নিই একলব্যের অর্জুনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সব সম্ভাবনা নষ্ট করে দিয়েছিলেন— সেটাও কৃষ্ণ নয়, দ্রোণাচার্য্য। কিন্তু এই সবই এক বিরাট, সুচিন্তিত, অনিবার্য অক্ষ-ছকের অংশ; যুদ্ধের আগের কয়েক বছরে যার পরিকল্পনা করেছিলেন— সমগ্রকে মিলিয়ে— যেখানে যা বাকী আছে সুচারুভাবে সম্পন্ন করে বাস্তবায়িত করেছিলেন— একজন, যিনি ঈশ্বর নন, তাঁর বার্তাবহও নন, কিন্তু মহাকালের নির্ধারিত সে যুগের ঐশী আবির্ভাব, God incarnate।
বর্তমান হরিয়ানায় অবস্থিত কুরুক্ষেত্র-প্রাঙ্গণ। (স্ত্রীপর্ব) এক বীভৎস শ্মশান— খুবলানো চোখ, রক্ত-অন্ত্র-কর্দম, ধুলামলীন স্বর্ণাভ কিরীটকে ঢেকে ছিন্ন অঙ্গ যেন পদ্মের ওপর মক্ষিকাসমাবেশের মত। কথাসরিৎসাগরে বিক্রমাদিত্য যে শ্মশানে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন গভীর রাত্রে— তার বর্ণনার সহস্রগুণ কল্পনা করে নিতে হবে একে দেখতে চাইলে।
গান্ধারী মহাভারতের একমাত্র দৃষ্টিসম্পন্ন নারী— বা শুধু নারীদের মধ্যেও নন্, একমাত্রই। বিদুর আর সঞ্জয় নিয়ে দ্বিমত আছে। গান্ধারী দেখেছিলেন বসনাবরুদ্ধ অশ্রুলেখারুদ্ধ নয়নে, যা এতজনের মধ্যে একমাত্র বর্বরীক দেখেছিল— তাও যুদ্ধভূমি সমগ্র সম্মুখ থেকে প্রত্যক্ষ দেখে। গান্ধারী দেখেছিলেন, সব অস্ত্রের ছেদক ‘নিখিলদুর্ধর্ষধর্ষণ’ সুদর্শন চক্র। তিনি দেখেছিলেন, সব কবন্ধের রক্তও সেই সুদর্শনের বৃত্তরেখায় লেগে আছে। শোকতপ্তা জননী ঐ এক মুহুর্তে সহজ সাধারণ নারীত্বে নেমে এসে কৃষ্ণকে বলেছিলেন, ‘তুমি দায়ী। তুমি হত্যাকারী। তুমি ঘাতক।’ গান্ধারী একমুহুর্তের জন্যও চেয়েছিলেন কি, বৃষ্ণিকূলের বধূরা কুরুকূলের বধূদের মতই অনাথারূপে বর্বরদের অঙ্কশায়িনী হোক? অভিসম্পাতবাক্য তাঁর মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়তেই তিনি কেঁদে লুটিয়ে পড়েছিলেন কৃষ্ণেরই পায়ে। বলেছিলেন, ‘তুমি আমার এ অভিশাপ কেন মাথা পেতে নিলে? দোহাই তোমার, এ-বাক্য তুমি গ্রহণ কোর না।’ গান্ধারী জানেন, এ-কথার অর্থ নেই। শ্রীকৃষ্ণের নিজেরই পরিকল্পনা তিনি ভবিষ্যৎদর্শনের ধাক্কায় আবৃত্তি করেছেন মাত্র। তিনি জানেন, তাঁর শুধু দৃষ্টি আছে। বাকী, তিনি অন্তঃপুরবাসিনী বৃদ্ধা। যে সুবিশাল যাদবকূল শ্রীকৃৃষ্ণেরও আগলানোর বাইরে চলে গিয়েছে, তাকে রক্ষা করার বাহুবল তাঁর কোথায়? তিনি কৃষ্ণকে বলতে চেয়েছেন, ‘তুমি কুরুকুলের ধর্ম-অধর্মের বিচার করছ, গীতা-প্রদীপের ছায়ায় তোমার নিজের ঘরের আঙিনায় যে পরিমাণ জঞ্জাল জমেছে তার হিসাব তুমি রাখ? মানুষ অধর্মের দৃষ্টান্ত পূর্বেই জানত, তুমি এই বিধ্বংসের উদাহরণ স্থাপিত করলে। যে দৃষ্টান্ত আছে তা কখনোই ধুয়ে যায় না। অধর্ম একেবারে কর্পুরের মত উবে যাবে না। কিন্তু— এই বিশ্বযুদ্ধের বিধ্বংস যুক্ত হল তার সাথে। তুমি কি ভাবছ, এর পুনরাভিনয় থেকে কোনও শুদ্ধ সংস্কৃতিই ভবিষ্যতে নিস্তার পাবে?’ তখনই তাঁর চোখের সামনে ভেসে উঠল প্রভাস ও পঞ্চনদের তীরের সেই ঘটনা, যা ঘটবে ৩৬ বৎসর পরে। তখন তিনি থাকবেন না, কিন্তু উত্তরকালের সতীদের দুর্গতি কল্পনা করে তাঁর মাতৄহৃদয় শিউরে উঠল। তিনি দুঃশলার বৈধব্য দেখেছেন, আরও ভয়াবহ সেই অবস্থায় পড়া দুর্ভাগিনীদের জায়গায় কন্যাকে কল্পনা করে তাঁর চিত্ত বিকল হয়ে গেল; তিনি ক্ষেপে উঠে বললেন, ‘তুমি ঘাতক!’ শ্রীকৃষ্ণ মেনে নিলেন সে-বাক্য, ভবিষ্যৎ তাঁর কি অজানা?
‘আমি অভিশপ্ত!’ স্কন্দপুুরাণাশ্রিত কালকূটের ‘শাম্ব’ উপন্যাসের এ শব্দদ্বয় প্রথম পাঠের সময়ে যেভাবে সমগ্র চেতনাকে দোলা দিয়ে যায়— সাধারণ উপন্যাসের যে দোলা এ তা নয়, এ দোলা ঝড়ের দোলা— যতবার শ্রীকৃৃষ্ণপুুত্র শাম্বর এই আত্মোপলব্ধি মনে পড়ে, ততবার সেই সমান প্রাবল্যের দোলা লাগে। শাম্ব যে অভিশাপকে অতিক্রম করতে উদ্যত হয়েছিল, সে-অভিশাপ যতটা তার পিতার, ততটাই বিধির। বিধি যাকে ঠেলে ফেলে দেয় খাদে, সে দেয় কারণ ছাড়াই। তার কার্যকরণ নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু সে প্রক্রিয়া ঐচ্ছিক নয়। শাম্বও জ্ঞানতঃ কোনও অপরাধ করে নি, অজ্ঞানতঃও করে নি। কিন্তু সে বিধির গতিকে অন্যায় মনে করে ভাগ্যকে দোষারোপ করে নি, অভিযোগ করে নি। বিধিরূপী শ্রীকৃৃষ্ণকে শিরোধার্য করে নিয়েছে। এই শিরোধার্য করাটা অদ্ভুত: সে কৃষ্ণের বাণীকে অমোঘ নিশ্চয়ই ধরেছে, ঈশ্বরের ইচ্ছা বলে ধরেছে। আর— তাকে খণ্ডন করতে চেয়েছে। সেই দুঃসাহস করতে পেরেছে, কারণ অভিশাপদাতাকে সে শত্রু বলে মনে করে নি, আত্মীয় বলেই মনে করেছে। সেই খণ্ডন করার দায় সে নিজের কাঁধে নিয়েছে, কেন এই দুঃসাধ্য অভিযান তাকে বরণ করতে হবে এই নিয়ে হা-হুতাশ করেনি। ‘আমি অভিশপ্ত, কিন্তু আমাকে এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে হবে। ততক্ষণ আমি ‘কেন’ নিয়ে মাথা ঘামাব না। আর শুধু মুক্তি পাওয়া স্বার্থপরতা, আমাকে আবিশ্বের হুতাশীকে সেই মুক্তির পথ দেখাতে হবে।’ অন্ধকার পথের ‘মারের সাগর’ দিয়ে সে হেঁটে চলেছে; তার শেষ প্রান্তে আলো তাকে খুঁজতে হবে এবং এনে রাখতে হবে প্রমিথিউসের মত তার ব্যথার দান শ্রীকৃষ্ণরূপী জগদীশ্বরেরই পায়ে। এই ছিল যুগনায়কের সুযোগ্য পুত্রের ঋগ্মন্ত্র।
আমরা কয়েক দশক পিছিয়ে গেলেই দেখতে পাব, শাম্বর পিতা সেই একই মুক্তির আলো খুঁজেছিলেন সূর্যনিষিদ্ধ কারাগৃহের অন্ধকারে, জন্মক্ষণ থেকে। সেই আলো তিনি প্রতিফলিত করেছিলেন এবং বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছিলেন। সেই আলোকে আমরা অধুনা ‘ভগবদ্গীতা’ বলি।
[ক্রমশঃ]
Comments
Post a Comment